খাগড়াছড়িতে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, ১৪৪ ধারা জারি

সারাদেশ

খাগড়াছড়িতে আবারও পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ অক্টাবর) দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে দুপুর ১টার দিকে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুলের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে একই প্রতিষ্ঠানের ইন্সট্রাক্টর (বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স) ও বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে (৪৮) পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।

শিক্ষক নিহতের জেরে পাহাড়ি ও বাঙালি দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীরা। বেশ কয়েক বছর আগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ওই ছাত্রী আদালতে এসে পাহাড়ি একটি সংগঠনের চাপে মামলা করেছে মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান এবং চাকরিতে যোগদান করেন। সোহেল রানা চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির নানা অভিযোগ এনে প্রত্যাহার দাবি করে আসছিল। আজও ত্রিপুরার এক ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল রানাকে গণপিটুনি দেন পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। এতে সোহেল রানার মৃত্যু হয়।

শিক্ষককে হত্যার প্রতিবাদে পাহাড়ি ও বাঙালি ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র। আহত হয়েছেন ১৫-২০ জন। পুরো শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুজন চন্দ্র রায় বলেন, উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের থামাতে গিয়ে আমি এবং জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ সংবাদকর্মীরা আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে চোর সন্দেহে খাগড়াছড়িতে মামুন (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপর অশান্ত হয়ে ওঠে পাহাড়। যার জেরে পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই জেলায় (খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি) ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।