আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ

১১০ দিন পর ভিক্ষুকের পা থেকে বুলেট অপসারণ

সারাদেশ

অবশেষে অপারেশনের মাধ্যমে ১১০ দিন পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ভিক্ষুক আয়েশা বেগমের (৭৬) বাম পা থেকে বুলেট বের করা হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে শহরের মানিকপুরের সিটি হেলথ কেয়ার সেন্টারে এই বৃদ্ধার পায়ে সফল অস্ত্রোপচার করেন ডা. এম এ মালেক মুরাদ।

এ সময় ডা. মালেক মুরাদ বলেন, ১৫ মিনিটের প্রচেষ্টায় তার পা থেকে গুলি বের করতে সফল হই। বর্তমানে তিনি সুস্থ ও আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।

জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে মানিকপুর এলাকায় বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন ভিক্ষুক আয়েশা বেগম (৭৬)।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা অবহেলায় সে সময় বিষয়টি ধরা না পড়লেও ঘটনার ৩ মাস পর গত ১৭ নভেম্বর এক্সরে পরীক্ষায় দেখা যায় ওই নারীর পায়ে বুলেট রয়ে গেছে। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরও চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি তারা।

গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই নারীর চিকিৎসার বিষয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জসীমউদ্দীন ভূঁইয়া জানান, ওই নারীর চিকিৎসার ব্যবস্থা সিভিল সার্জন কার্যালয় করতে পারবে না। তার নিজেরই নিজের চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে যেতে পারে, অথবা ঢাকায় যোগাযোগ করতে পারে।

ভিক্ষুক আয়েশা তার পা থেকে গুলি বের হওয়ায় পর ঘরে ফিরে গেছেন। তার দেহ থেকে গুলিটি বের করে আনার জন্য যারা অবদান রেখেছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। তবে ভিক্ষুক বলে সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ গুরুত্ব না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

আয়েশা বেগমের স্বামী ও সন্তান কেউ-ই নেই। বাড়ি চাঁদপুরে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে স্বামী লতিফ সরদারের মৃত্যুর পর প্রায় এক যুগ আগে মুন্সীগঞ্জ শহরে চলে আসেন তিনি। বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। ঘটনার দিনও তিনি ভিক্ষা করতে বেরিয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের কাছের প্রধান রাস্তায় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান। কিছু বুঝে উঠার আগেই পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। সঙ্গে সঙ্গে পাশের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কোনো সমস্যা নেই বলে ছেড়ে দেন। কিন্তু তার ব্যথা কমেনি। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বেসরকারি একটি ডায়গনেস্টিক সেন্টারে এক্স-রে করেন।