গাজায় ইসরাইলের বর্বর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে রাজধানীতে জামায়াতের বিক্ষোভ

রাজনীতি

যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজনের উপর গণহত্যার দায়ে নেতানিয়াহুকে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মুসলিম রাষ্ট্র গুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোড়া রক্তখেকো, রক্তচোষা নেতানিয়াহু মানব সভ্যতার দুশমন।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নেতানিয়াহুর বিচারের দাবি তুলতে আহ্বান জানান।

পাসপোর্টে ইসরাইল গমনের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়ে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরাইল গমন নিষেধ ছিল। সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের দোসর শেখ হাসিনা গোপনে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে ইসরাইল যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।

ইসরাইলের সাথে সব ধরণের কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে তিনি বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মুসলিমদের টাকায় ইসরাইল অস্ত্র তৈরি করে সেই অস্ত্র দিয়ে আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের হত্যা করবে তা মেনে নেওয়া যায় না, যাবে না। ইসরাইলের উপর অর্থনৈতিক চাপ, আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির দাবিও জানান জামায়াতের এই নেতা।

প্রতিবাদ সভায় তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, ইসরাইলে ভিক্ষুকরূপে আরব বুকে একটু ভূখন্ড চেয়েছে। তাদেরকে ভূখন্ড দেওয়ার পর তারা মুসলমানদের প্রথম কাবা দখল করে নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। এজন্যই তারা ফিলিস্তিনের নাগরিকদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালাচ্ছে। ইসরাইলের এই হামলা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বিশ্ব নেতাদের মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, সন্ত্রাসী ইসরাইল মুসলমানদের প্রথম কিবলা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরকে হত্যা করেছে। ইসরাইল পরিচালিত গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি ইসরাইলের পণ্য বর্জন করতে মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ইসরাইলের মতোই বাংলাদেশের জনগণের উপর আওয়ামী লীগ গণহত্যা চালিয়েছে। পার্থক্যটা হচ্ছে, ইসরাইল প্রতিবেশী রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের উপর গণহত্যা চালাচ্ছে, আর বাংলাদেশের জনগণের উপর নিজ দেশে আওয়ামী লীগ গণহত্যা চালিয়েছে।

তিনি নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্যে বলেন, নেতানিয়াহু হামলা চালিয়ে ঘোষণা দিয়েছে, হামলা মাত্র শুরু, আমরা বলবো তোমাদের ধ্বংসের যাত্রা শুরু। মক্কা বিজয়ের মতই অচিরেই ফিলিস্তিন বিজয় লাভ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাফেররাও যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লংঘন করে মক্কায় হামলা চালিয়েছে, ইসরাইলেও যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়েছে।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে মোহাম্মদ কামাল হোসেন, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন প্রমুখ।

প্রতিবাদ সভা শেষে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মৎস্য ভবন অতিক্রম করে শাহবাগ গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ ছাড়াও হাজার-হাজার তৌহিদী জনতা অংশগ্রহন করেন।